ম্যাচ দুলছিল পেন্ডুলামের মতো। সঙ্গে ফরচুন বরিশাল ও মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর প্লে অফ ভাগ্যও। প্রথম ইনিংসে বরিশালের করা ১৯৩ রান যদি বেক্সিমকো ঢাকা ১৮.২ ওভারে তাড়া করে, তবেই রাজশাহী যাবে শেষ চারে।
অভিষেক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি করা ঢাকার ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম যেভাবে খেলছিলেন, তাতে একপর্যায়ে এই সমীকরণ অসম্ভব মনে হয়নি।
শেষ পর্যন্ত ১৮.২ ওভারে ১৯৩ রান তাড়া করে জিততে পারেনি ঢাকা। উল্টো রোমাঞ্চ ছড়িয়ে ফরচুন বরিশালের কাছে হারতে হয় ২ রানে। অপেক্ষাকৃত ভালো বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে শেষ পর্যন্ত চতুর্থ দল হিসেবে বরিশাল উঠল প্লে অফে। এর সঙ্গে শেষ হয়ে গেল রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি লিগ অভিযান।
১৪ ডিসেম্বর প্রথম এলিমিনেটর ম্যাচে ঢাকা খেলবে বরিশালের বিপক্ষে। প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলবে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ও জেমকন খুলনা।
ঢাকা ও বরিশাল ম্যাচের সব সমীকরণ ছাপিয়ে আলোচনায় ছিল একঝাঁক তরুণ ব্যাটসম্যানের ভয়ডরহীন ব্যাটিং। বরিশাল আগে ব্যাট করে ওপেনার সাইফ হাসানের ব্যাটে পায় উড়ন্ত সূচনা।
আজ তামিম ছিলেন ব্যর্থ। তবে সেটি বুঝতেই দেননি সাইফ। পাওয়ার প্লেতে সাইফ যা করেছেন, তা ছিল টি-টোয়েন্টির প্রথম ছয় ওভারের জন্য আদর্শ।
পাওয়ার প্লের পর কিছুটা মন্থর ব্যাটিং করলেও রানের গতি বাড়ান আরেক তরুণ আফিফ হোসেন। ১২ রানে বাউন্ডারির লাইনে আফিফের সহজ ক্যাচ ছাড়েন রবিউল ইসলাম। সেখান থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাননি।
আগ্রাসী মেজাজে করেছেন ২৫ বলে ফিফটি। অপর প্রান্তে আরও দ্রুত রান তোলেন তৌহিদ হৃদয়। ২২ বলে হৃদয়ের ফিফটি এ টুর্নামেন্টে দ্রুততম। দুজন মিলে মাত্র ৩৮ বলে যোগ করেন ৯১ রান। শেষ পর্যন্ত দুজনই থাকেন অপরাজিত। বরিশালের ইনিংস থেমেছে ৩ উইকেটে ১৯৩ রানে।

এই রান তাড়া করতে গিয়ে যেমন শুরু দরকার ছিল, তেমনই ব্যাটিং করেছেন ঢাকার দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও সাব্বির রহমান। পাওয়ার প্লেতেই ঢাকার রান ৫০ ছাড়ায়।
কিন্তু এরপর সাব্বির, মুশফিক ও আল আমিনের আউটে রানের গতি কমে ঢাকার। মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দীর বোলিং ছিল বরিশালের মাঝের ওভার নিয়ন্ত্রণের আরেক বড় কারণ। সেই সময় ধুঁকছিলেন থিতু হওয়া ওপেনার নাঈমও।
কিন্তু তাঁর ভাগ্য খুলে যায় বরিশালের ভুলে। ব্যক্তিগত ৪৯ রানে পারভেজ ছাড়েন নাঈমের সহজ ক্যাচ। সেই বলে এক রান নিয়ে ফিফটি পূর্ণ করে যেন রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন নাঈম।
পরের ১৭ বলে ৪টি চার ও ৬টি ছক্কায় আরও ৫০ রান যোগ করে ম্যাচের চেহারা পাল্টে দেন। ৬০ বলে টুর্নামেন্টের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।

নাঈম সঙ্গী হিসেবে পান ফর্মে থাকা ইয়াসির আলীকে। আরেক প্রান্ত থেকে তিনিও দ্রুত রান তুলে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন। দুজনের আগ্রাসী ব্যাটিং ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা জাগায়।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত সুমন খানের বলে ৬৪ বলে ১০৫ রান করে ক্যাচ আউট হন নাঈম। ইয়াসির (২৮ বলে ৪১) হন রান আউট। ম্যাচের চেহারা আরেকবার পাল্টায় দুজনের দ্রুত আউটে। শেষ ওভারে ১৭ রান দরকার ছিল ঢাকার।
বরিশালের বোলার কামরুল ইসলাম এখান থেকে ম্যাচ বাঁচান। ২ রানে ম্যাচ জিতে ২ পয়েন্ট অর্জন করে চতুর্থ দল হিসেবে শেষ চার নিশ্চিত করে বরিশাল।
0 Comments